আনম রফিকুর রশীদ | দুটি কবিতা
অন্ধকার মহিমান্বিত
আলোর পথে দৌড়তে দৌড়তে দিকভ্রান্ত শিশু
উচ্ছল জোয়ারের কল্লোলে যৌবন ভাসায়
স্বপ্নিল খেয়া ঝলমল মরিচিকায় পথ হারায়
ভ্রান্ত গন্তব্যে ভাসতে ভাসতে খুঁজে পায় যিশু,
'নোনা দরিয়ায় কে তরি ডুবায় এই তীরে এসো!'
টেনে নেন বুকে স্বর্গীয় হাতের ছোঁয়া দেন চোখে
নিমিখে দৃষ্টি পড়ে হেরার গাঢ় অন্ধকার গুহায়
ধ্যানমগ্ন প্রসন্ন তনু আলোর পথ খুঁজে তমসায়
সর্বাঙ্গে প্রচণ্ড ঝাঁকুনি শেষে পুলক শিহরণ বুকে
উদ্বেল প্রাণ ছুটে দুর্বার বেগে, কার সাধ্য রুখে!
শেষমেশ বুঝি, আলোর পথ দুস্তর, অন্ধকারে সুপথ
বদ্ধ চোখে দেখি, চাঁদের হাট অন্ধকার ঠিকানায়;
ধরার অন্ধকার সাময়িক, সূর্যের দাপটে হারায়
চিরবসন্তের অন্ধকার কবর, নেই দূষণ শব্দের রথ
কবরের অন্ধকার নির্ঝঞ্ঝাট, সর্বশান্তপ্রাণ মহৎ।
বাঁকা রোজনামচা
সইতে সইতে নঈন সবুর বাঁকা হয়ে বসে
খেতে খেতে জিলেপির প্যাচ ঘুরে দাঁড়ায়
সাপের বিষের ফণা তুলে ছোবল মারে কষে
বাঘবেশী সারমেয় লজ্জায় লেজ গোটায়
ঠ্যালার নাম বাবাজি, ঘি তুলে বাঁকা আঙুলে
সোজা হয়ে চলতে চলতে কুঁজো হয়ে দেখে
নদী চলে বাঁকা পথে, বাঁকা নাও অকূলে
ডুবতে ডুবতে অতল স্রোতে বাঁকা পথে যুঝে
ঢেউর জলে তীরের ছবি বাঁকা চোখে আঁকে
শকট বলতে চলতেফেরতে বাঁকাসড়ক বুঝে
এঁকেবেঁকে বাঁকালতা জাল পাতে গোকুলে
আকাশঠোঁটে হাসির চোট; বাঁকা ধনু রং ছড়ায় যদি
বাঁকা সেতুর আলোর বন্যায় ভাসে পদ্মা নদী।
বক্র রেখায় বছর বছর বন্দি থাকে সিংহ গদি;
কেঁচোর দল সোজাদাঁড়া বাঁকা করায় সক্ষম অবদি।